পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলিশের পা ধরে তিন ভাইয়ের আকুতি
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘স্যার, আমরা চুরি করতে জানি না, কাজ করে খাই। আমার ভাই চোর নয়, তাকে ছেড়ে দিন।’ এভাবে ব্যস্ত সড়কে কান্নাকাটি আর হাতে পায়ে ধরেও পুলিশের মন গলাতে পারেনি তিন কিশোর সহোদর। চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে এক ভাইকে ধরে নিয়ে থানায় পুড়েছেন পুলিশের এসআই সোহেল।
গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভাই আবদুর রহিমকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে থানার ফটকে অঝোরে কাঁদছিল দুই ভাই মো. রাসেল ও রায়হান। কোতোয়ালী থানা হাজতখানার দেয়াল ধরে কাঁদছিল রহিমও। কিন্তু তাদের কান্না পুলিশের কান পর্যন্ত পৌঁছেনি।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর দেড়টায় নগরীর কাজীর দেউড়ি থেকে ১৪ বছরের কিশোর আবদুর রহিমকে আটক করে পুলিশ। এ সময় মোটরসাইকেলে বসা কোতোয়ালী থানার এএসআই সোহেলের পা জড়িয়ে ধরে চুরি করেনি বলে কান্নাকাটি শুরু করে আবদুর রহিম। সাথে থাকা ছোট ভাই রাসেলও এএসআই সোহেলের অপর পাটি জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
খবর পেয়ে ছুটে আসে আরেক ভাই রায়হানও। তিন ভাই মিলে ব্যস্ত সড়কে পুলিশ কর্মকর্তার হাত পা ধরে করুণ কাকুতি মিনতি করতে শুরু করে। এ সময় সেখানে মানুষের ভিড় জমে যায়। তাদের তিন ভাইয়ের দাবি তারা চোর নয়। কাজির দেউড়ি বাজারে মাছের দোকানে চাকরি করে জীবন চালায় তারা।
ছোটবেলা থেকেই এ বাজারে কাজ করছে তারা। বাজারের ব্যবসায়ী এমনকি ক্রেতারাও তাদের চিনে। তিন ভাইয়ের কান্নাকাটিতে উপস্থিত লোকজনের চোখেও পানি আসে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। দুই ভাইকে ধাক্কা মেরে ফেলে রহিমকে নিয়ে যাওয়া হয় কোতোয়ালী থানায়। সন্দেহভাজন হিসেবে রাহিমকে আটক করে মোটরসাইকেলে বসিয়ে থানায় নিয়ে যায় এসআই সোহেল।
মো. রাসেল বলেন, কিছুদিন আগে নাকি সিডিএ মার্কেটের তিনতলা থেকে একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। আজ আমার ভাই বাজারে মাছের দোকানে কাজের ফাঁকে চা খেতে এসেছিল। এ সময় বন্ধুদের সঙ্গে তিনতলায় উঠেছিল কথা বলতে। এ সময় রানা নামের এক ভদ্রলোক তাকে ধরে কিল-থাপ্পড় মারতে থাকে। পরে পুলিশে সোপর্দ করে।
বলতে বলতে কাঁদতে থাকে রাসেল। বললেন, বাবা মারা গেছেন রমজানে। রেখে গেছেন তিন ভাই এক বোন। তিন ভাই কাজীর দেউড়ি মাছের দোকানে শ্রমিকের কাজ করি। পরিশ্রম করে কোনো রকমে সংসার চালাই। আমরা চুরি করি না।
যোগাযোগ করলে এএসআই সোহেল বলেন, ল্যাপটপ চুরির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র শীল আমাকে বলেছেন সন্দেহভাজন একজনকে বাদী আটক করেছেন। আমি তাকে থানায় পৌঁছে দিয়েছি।
বিকাশ চন্দ্র শীল বলেন, ল্যাপটপ কে চুরি করেছে তা কেউ দেখেননি। তিনতলায় কয়েকজন কিশোর আড্ডা মারছে দেখে বাদীর সন্দেহ হয়েছে। তিনি একজনকে আটক করে খবর দিয়েছেন। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছি। কথাবার্তা বলে সন্দেহজনক মনে না হলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
রাতে থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার রোকেয়া জানান, রহিমকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। চুরির মামলায় আনা হলেও রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।